IGBT বা ইনসুলেটেড গেইট বাইপোলার ট্রানজিস্টর একটি নতুন আধুনিক ডিভাইস যা পাওয়ার ইলেক্ট্রনিক্সে ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। IGBT আবিষ্কারের পূর্বে পাওয়ার BJT এবং পাওয়ার মসফেট পাওয়ার ইলেক্ট্রনিক্সে ব্যবহৃত হত।
এই ডিভাইসগুলোর কিছু সুবিধা ও অসুবিধাও আছে। এখন আমরা পাওয়ার BJT এবং পাওয়ার মসফেটের সাথে IGBT এর তুলনা করবো।
পাওয়ার BJT:
অসুবিধাঃ
- খারাপ সুইচিং পারফর্মেন্স
- লো ইনপুট ইম্পিডেন্স
- সেকেন্ডারী ব্রেকডাউন (ফেলিউর)
সুবিধাঃ
- চমৎকার কন্ডাকশন
- হাই কারেন্ট কন্ট্রোলিং ক্ষমতা
পাওয়ার মসফেটঃ
অসুবিধাঃ
- খারাপ কন্ডাকশন
- হাই অন স্টেট, যেকারণে ভোল্টেজ রেটিং বাড়ে
সুবিধাঃ
- হাই ইনপুট ইম্পিডেন্স
- চমৎকার সুইচিং পারফর্মেন্স
IGBT:
পাওয়ার BJT এবং পাওয়ার মসফেটের অসুবিধাগুলো দূর করতে ১৯৮০ সালে IGBT পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
- পাওয়ার মসফেটের মতো IGBT এর ইনপুট ইম্পিডেন্স হাই এবং এতে সেকেন্ডারী ব্রেকডাউন বা ফেলিউর হওয়ার প্রবলেম নাই।
- পাওয়ার BJT এর মতো IGBT এর কন্ডাকশন লস অনেক কম এবং কারেন্ট হেন্ডেলিং ক্ষমতা বেশি।
- দামী।
সুতরাং বলা যায়, IGBT এর পাওয়ার মসফেটের মতো ইনপুট বৈশিষ্ট্য এবং পাওয়ার BJT এর মতো আউটপুট বৈশিষ্ট্য থাকে।
সিম্বলঃ
IGBT এর যেহেতু মসফেট এবং BJT এর বৈশিষ্ট্য থাকে তাই এর সিম্বলও BJT ও মসফেটের সংমিশ্রনে হয়েছে। গেইট ক্যাপাসিটরের মাধ্যমে ইনসুলেটেড থাকে এবং যেহেতু বাইপোলার টাইপ তাই আউটপুট সাইডে ট্রানজিস্টর সিম্বল কালেক্টর(C) এবং ইমিটার(E) থাকে।
গেইট হচ্ছে কন্ট্রোল টার্মিনাল এবং কালেক্টর ও ইমিটার হচ্ছে কন্ডাকশন টার্মিনাল। IGBT বিভিন্ন নামে পরিচিত।
→ MOSIGT: মেটাল অক্সাইড সেমিকন্ডাক্টর ইনসুলেটেড গেইট ট্রানজিস্টর
→ GEMFET: গ্রেইন মডুলেটেড ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর
→ COMFET: কন্ডাক্টিভলি মডুলেটেড ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টর
→ IGT: ইনসুলেটেড গেইট ট্রানজিস্টর
IGBT এর সুপেরিয়র বৈশিষ্ট্যের জন্য পাওয়ার ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয়।
কন্সট্রাকশনঃ
IGBT এর কন্সট্রাকশন পাওয়ার মসফেটের মতোই। এতে কিছুটা পরিবর্তন আছে।
- সবার নিচে P+ লেয়ার থাকে যেটি হচ্ছে ইঞ্জেকশন লেয়ার। কারণ এটি মেজরিটি চার্জ কেরিয়ার হোল n- লেয়ারে ইঞ্জেক্ট করে।
- এর উপরে n- লেয়ার ডেপোজিট হয়।
- P+ লেয়ারের নিচে একটি মেটাল লেয়ার থাকে যাতে কালেক্টর টার্মিনাল কানেক্টেড।
- n- লেয়ারের উপর P-টাইপ লেয়ার ডিফিউজ হয়।
- P-টাইপ লেয়ারের উপর আবার n+ টাইপ লেয়ার ডিফিউজ হয়।
- এর উপর আবার সিলিকন ডাই অক্সাইড(SiO2) লেয়ার থাকে। এর সাথে মেটাল কম্বাইন করা থাকে কানেকশনের জন্য যাতে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- ইমিটার E বামপাশে দুটি লেয়ার n+ ও P এর সাথে এবং ডানপাশে আরও দুটি n+ ও P এর সাথে যুক্ত।
- গেইটে VG এবং কালেক্টরে Vcc ভোল্টেজ দেওয়া হয়।
- P+ এবং n- এর জাংশন J1, P এবং n- এর জাংশন J2 ।
- n- লেয়ার অংশকে ড্রিফট লেয়ার বলে। এর লেয়ারের পুরুত্বের উপর IGBT এর ভোল্টেজ ব্লক ক্যাপাসিটি নির্ভর করে।
- P+ এখানে ইঞ্জেকশন লেয়ার এবং P হচ্ছে বডি রিজিওন।
ওয়ার্কিংঃ
- Vcc ভোল্টেজের পজিটিভ টার্মিনাল কালেক্টরে যুক্ত এবং ইমিটারে নেগেটিভ টার্মিনাল যুক্ত। আমরা শুধু Vcc ভোল্টেজ দিয়েছি, গেইটে কোন ভোল্টেজ দিবনা।
- এখন জাংশন J2 রিভার্স বায়াসড এবং জাংশন J1 ফরওয়ার্ড বায়াসড।
- J2 রিভার্স বায়াসড হওয়ার কারণে কালেক্টর টু ইমিটার কারেন্ট প্রবাহিত হয়না।
- এখন আস্তে আস্তে গেইট ইমিটার ভোল্টেজ VG বাড়াবো।
- যখন গেইট ভোল্টেজ দেওয়া হয় তখন SiO2 লেয়ারে গেইটের নিচে ক্যাপাসিটর ফর্ম হয়। এই ক্যাপাসিটর একটা চ্যানেল ইন্ডিউজড করে।
- নেগেটিভ(-) আয়ন SiO2 লেয়ারের উপরে এবং পজিটিভ(+) আয়ন নিচে জমা হয়। ফলে P রিজিওনে নেগেটিভ(-) চার্জ কেরিয়ার ঢুকতে থাকে।
এই নেগেটিভ(-) চার্জ কেরিয়ার কিভাবে চ্যানেল ফর্ম করে?
- SiO2 লেয়ারের ক্যাপাসিটরের পজিটিভ(+) চার্জ কেরিয়ার P রিজিওনের সকল ইলেকট্রন বা নেগেটিভ(-) চার্জ কেরিয়ারকে(মাইনরিটি) আকৃষ্ট করে গেইটের নিচে। এভাবে চ্যানেল ফর্ম করে।
- গেইট ভোল্টেজ VG বাড়ালে চ্যানেল আরও শক্তিশালী হয় এবং এই চ্যানেল কালেক্টর থেকে ইমিটারে কারেন্ট প্রবাহ নিশ্চিত করে।
- এই দুই নতুন চ্যানেল ফর্ম করে গেইটে থ্রেশহোল্ড ভোল্টেজের সমান বা বেশি ভোল্টেজ দিলে।
- গেইট ভোল্টেজ VGE বাড়ালে কালেক্টর টু ইমিটার কারেন্ট প্রবাহও বাড়ে।
ইকুইভেলেন্ট সার্কিট(অপারেশন):
- ইনপুট সাইডে মসফেট এবং আউটপুট সাইডে BJT কানেক্টেড। যখন গেইট পটেনশিয়াল দেওয়া হয় তখন গেইটে কারেন্ট বাড়তে থাকে।
- গেইট কারেন্ট IG গেইট-ইমিটার ভোল্টেজ VGE বাড়ায়। এই VGE ভোল্টেজ কালেক্টর কারেন্ট IC প্রচুর পরিমাণে বাড়ায় এবং এই কালেক্টর কারেন্ট কালেক্টর-ইমিটার ভোল্টেজ VCE কমায়।
সুইচিং সার্কিটঃ
- IGBT ভোল্টেজ কন্ট্রোল ডিভাইস। অল্প ভোল্টেজ গেইটে দিলে এটি কন্ডাকশন স্টেটে যায়।
- এটি ইউনিডিরেকশনাল ডিভাইস। শুধুমাত্র ফরওয়ার্ড ডিরেকশনে কালেক্টর টু ইমিটার কারেন্ট সুইচিং করে।
- গেইটে ভোল্টেজ VG দিলে মোটর সুইচিং করে +V সাপ্লাই ভোল্টেজের মাধ্যমে অন হয়।
- মোটর কয়েলের মধ্যে প্রবাহিত কারেন্ট লিমিট করার জন্য রেজিস্টর Rs ব্যবহার হয়।
অ্যাপ্লিকেশনঃ
- এসি এবং ডিসি মোটর ড্রাইভ (VFD)
- ইউপিএস (UPS)
- সুইচিং মোড পাওয়ার সাপ্লাই (SMPS)
- ইন্ডাকশন হিটার
- ইনভার্টার