থার্মিস্টর কি? কিভাবে কাজ করে?

থার্মিস্টর

থার্মিস্টর বা থার্মাল রেজিস্টর হচ্ছে এক ধরণের রেজিস্টর যা তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে এর ইলেক্ট্রিক্যাল রেজিটেন্সেরও পরিবর্তন ঘটে। যদিও সব রেজিস্টরেরই তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে কমবেশি পরিবর্তন ঘটে, কিন্তু থার্মিস্টর তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে বেশি সেনসিটিভ।

 

থার্মিস্টর হচ্ছে প্যাসিভ ইলেক্ট্রিক্যাল কম্পোনেন্ট, অর্থাৎ এটি ইলেক্ট্রিসিটি কন্ট্রোল করতে পারেনা। এটি খুব সস্থা এবং নির্ভুলভাবে তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডায় এটি ভালো কাজ নাও করতে পারে। সেজন্য স্পেশাল টেম্পারেচার সেন্সর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 1k, 2k, 10k, 29k,100k মানের থার্মিস্টর পাওয়া যায়।

ব্যবহারঃ

থার্মিস্টর ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক অ্যাপ্লিকেশনে বহুল ব্যবহৃত হয়।

  • এটি থার্মোমিটার হিসেবে বিভিন্ন লিকুইড এবং পরিবেশের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে।
  • অটোমোটিভঃ গাড়ির তেল, লুব্রিকেন্ট এবং কুলেন্টের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে পারে।
  • হাউজহোল্ডঃ মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ফ্রিজ, এসি।
  • সার্কিট প্রটেকশন(সার্জ প্রটেকশন)।
  • ডিজিটাল থার্মোমিটার।
  • রিচার্জেবল ব্যাটারিতে যাতে সঠিক তাপমাত্রা মেইনটেইন করতে পারে।

ওয়ার্কিংঃ

  • থার্মিস্টরের রেজিটেন্স হচ্ছে টেম্পারেচার ডিপেন্ডেন্ট। থার্মিস্টরের রেজিটেন্স আমরা ওহমমিটারের মাধ্যমে পরিমাপ করতে পারি।
  • যদি টেম্পারেচারের পরিবর্তনের সাথে সাথে থার্মিস্টরের রেজিটেন্স পরিবর্তনের হার আমরা জানি তাহলে সহজেই তা নির্ণয় করতে পারি।
  • কি হারে রেজিটেন্সের পরিবর্তন ঘটবে তা নির্ভর করে থার্মিস্টর কি টাইপ মেটারিয়ালে তৈরি তার উপর।

  • থার্মিস্টরের টেম্পারেচার এবং রেজিটেন্সের রিলেশনশিপ হচ্ছে নন-লিনিয়ার।

টাইপঃ

NTC- নেগেটিভ টেম্পারেচার কো-ইফিশিয়েন্টঃ

  • NTC এর ক্ষেত্রে টেম্পারেচার বাড়ার সাথে সাথে এর রেজিটেন্স কমতে থাকে।
  • যখন টেম্পারেচার কমে তখন এর রেজিটেন্স বাড়তে থাকে।
  • NTC থার্মিস্টরের ক্ষেত্রে, টেম্পারেচার এবং রেজিটেন্স ইনভার্সলি প্রপোর্শনাল (ব্যাস্তানুপাতিক)।
  • NTC হচ্ছে সবচেয়ে কমন থার্মিস্টর।

PTC- পজিটিভ টেম্পারেচার কো-ইফিশিয়েন্টঃ

  • যখন টেম্পারেচার বাড়ে তখন এর রেজিটেন্সের মানও বাড়তে থাকে।
  • যখন টেম্পারেচার কমে তখন এর রেজিটেন্সের মান কমতে থাকে।
  • PTC থার্মিস্টরের ক্ষেত্রে, টেম্পারেচার এবং রেজিটেন্স প্রপোর্শনাল (সমানুপাতিক)।
  • PTC থার্মিস্টরের ব্যবহার অনেক কম; সার্কিট প্রটেকশনের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। ফিউজ ফাংশনে এটি কারেন্ট লিমিটিং ডিভাইস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • যখন কোন ডিভাইসে কারেন্ট প্রবাহিত হয় তখন রেজিস্টিভ হিটিংয়ের জন্য এর টেম্পারেচার বাড়ে। বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হলে ডিভাইসের টেম্পারেচার আরও বাড়তে থাকে। PTC থার্মিস্টরে ডিভাইসের টেম্পারেচার বাড়ার ফলে রেজিটেন্স বেড়ে যায়। কুরি টেম্পারেচারের বেশি গেলে PTC থার্মিস্টরের রেজিটেন্স উল্লেখিতভাবে বেড়ে যায়। এই ইফেক্ট ওভারকারেন্ট, ইনরাশ কারেন্ট লিমিট করার কাজে ব্যবহৃত হয় যা ডিভাইসকে রক্ষা করে যেহেতু রেজিটেন্স তখন অনেক বেড়ে যায়।

এভাবে কারেন্ট লিমিট করে সে ওভারস্ট্রেস দূর করে। সুতরাং বলা যায়, PTC থার্মিস্টর একটি কারেন্ট লিমিটিং ডিভাইস।

সুবিধাঃ

  • সস্থা।
  • দ্রুত তাপমাত্রার পরিবর্তন পরিমাপ করতে পারে।
  • নির্দিষ্ট রেইঞ্জে হাই একুরেচি পরিমাপ করে।

অসুবিধাঃ

  • লিমিটেড টেম্পারেচার রেইঞ্জ ৩৫০°C ।
  • নিজস্ব হিটের প্রভাব প্রসেস বা পরিবেশের সাথে যোগ করে রেজিটেন্সের মানে পরিবর্তন আনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *