ডায়োডঃ
ডায়োড হচ্ছে একটি সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস যা N-টাইপ ও P-টাইপ মেটারিয়ালের সমন্বয়ে গঠিত। ডায়োড কারেন্ট প্রবাহের ক্ষেত্রে একটি ওয়ান অয়ে সুইচ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ একদিকে কারেন্ট ফ্লো অনুমতি দেয় এবং বিপরীতদিকে কারেন্ট প্রবাহে বাধা দেয়।
ডায়োড রেক্টিফায়ার হিসেবেও পরিচিত, কারণ এটি এসি কারেন্টকে ডিসিতে রূপান্তরিত করে। ভোল্টেজ, কারেন্ট ক্যাপাসিটি এবং টাইপ অনুসারে ডায়োড ভিন্ন রকম হয়।
- P-N জাংশনের সমন্বয়ে ডায়োড তৈরি হয়। P-N জাংশনে তখন উভয় মেটারিয়াল P এবং N আর কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করেনা, যদিও আলাদাভাবে এরা উভয়ই কন্ডাক্টর। P-N জাংশনে কারেন্ট একদিকে প্রবাহিত হয় যা বেসিক ডায়োড তৈরি করে।
- এই P-N জাংশন বিভিন্ন সেমিকন্ডাক্টরের দ্বার উন্মুক্ত করেছে যেমন ট্রানজিস্টর।
- ডায়োডের পজিটিভ সাইড হচ্ছে অ্যানোড(A) এবং নেগেটিভ সাইড হচ্ছে ক্যাথোড(K)।
- N-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের যতেষ্ট ফ্রী ইলেকট্রন এবং অল্প সংখ্যক হোল থাকে। আবার P-টাইপ সেমিকন্ডাক্টরের যতেষ্ট হোল এবং অল্প সংখ্যক ফ্রী ইলেকট্রন থাকে।
আনবায়াসড ডায়োডঃ
- N-টাইপ রিজিওনে ফ্রী ইলেকট্রনের ঘনত্ব বেশি এবং P-টাইপ রিজিওনে কম থাকে। ফলে ফ্রী ইলেকট্রন N-টাইপ রিজিওন থেকে P-টাইপ রিজিওনের দিকে ছুটতে থাকে।
- হোলের ঘনত্ব P-টাইপ রিজিওনে বেশি এবং N-টাইপ রিজিওনে কম। ফলে P-টাইপ রিজিওন থেকে হোল N-টাইপ রিজিওনে যেতে চায়।
- ফ্রী ইলেকট্রন N-টাইপ রিজিওন থেকে মোভ করে P-টাইপ হোলের সাথে রি-কম্বাইন করে আনকভারড (-) আয়ন তৈরি করে P-টাইপ রিজিওনে।
- ফ্রী হোল P-টাইপ রিজিওন থেকে মোভ করে N-টাইপ রিজিওনে গিয়ে ফ্রী ইলেকট্রনের সাথে রি-কম্বাইন করে আনকভারড (+) আয়ন তৈরি করে N-টাইপ রিজিওনে।
- এভাবে জাংশনের মাঝখানে N-টাইপ সাইডে পজিটিভ আয়ন লেয়ার এবং P-টাইপ সাইডে নেগেটিভ আয়ন লেয়ার তৈরি করে। মাঝখানের এই আনকভারড নেগেটিভ ও পজিটিভ আয়নের কোন চার্জ কেরিয়ার থাকেনা। কারণ এই রিজিওনে চার্জ কেরিয়ার রি-কম্বাইন হয়ে যায়। চার্জ কেরিয়ারের অভাবের কারণে এই রিজিওনকে ডিপ্লেশন রিজিওন বলে।
- ডিপ্লেশন রিজিওন ফর্ম হওয়ার পর এক সাইড থেকে অন্য সাইডে চার্জের সমাবেশ হয়না। কারণ ডিপ্লেশন রিজিওনে তখন ইলেকট্রিক ফিল্ড তৈরি হয় যা এক সাইড থেকে অন্য সাইডে চার্জ কেরিয়ার মাইগ্রেশনে বাধা দেয়।
- আনকভারড পজিটিভ আয়ন লেয়ার তখন P-টাইপ সাইডে থাকা ফ্রী হোলগুলোকে আসতে বাধা দেয়। আবার নেগেটিভ আয়ন লেয়ার তখন N-টাইপ সাইডে থাকা ফ্রী ইলেকট্রনগুলোকে আসতে বাধা দেয়। অর্থাৎ পটেনশিয়াল বেরিয়ার তৈরি হয় জাংশনের মাঝে যা চার্জ কেরিয়ার সমাবেশ প্রতিরোধ করে।
ফরওয়ার্ড বায়াসড ডায়োডঃ
যদি P-টাইপ টার্মিনালে পজিটিভ(+) এবং N-টাইপ টার্মিনালে নেগেটিভ(-) ভোল্টেজ কানেক্ট করি তাহলে কি ঘটবে?
- ডিপ্লেশন রিজিওনে ফরওয়ার্ড পটেনশিয়াল বেরিয়ার বা ইলেকট্রিক ফিল্ডের চেয়ে বেশি শক্তিশালী এক্সটার্নাল ভোল্টেজ দিলে ঐ বেরিয়ার তখন ভেঙে পড়ে। সিলিকন ডায়োডের ক্ষেত্রে ফরওয়ার্ড পটেনশিয়াল বেরিয়ার ভোল্টেজ হচ্ছে ০.৭ ভোল্ট এবং জার্মেনিয়াম ডায়োডের ক্ষেত্রে ০.৩ ভোল্ট।
- ০.৭ ভোল্টের বেশি ভোল্টেজ দিলে তখন ডিপ্লেশন বেরিয়ার ক্রস করে ফ্রী চার্জ কেরিয়ার এক সাইড থেকে অন্য সাইডে যায় যা ডায়োড ফরওয়ার্ড কারেন্ট প্রোভাইড করে। এই অবস্থায় ডায়োড শর্ট সার্কিটের মতো কাজ করে।
রিভার্স বায়াসড ডায়োডঃ
- সাপ্লাই ভোল্টেজের নেগেটিভ পটেনশিয়ালের কারণে P-টাইপ সাইডের ফ্রী হোল শিফট হয়ে জাংশন থেকে দূরে যায় এবং আরও অধিক আনকভারড নেগেটিভ আয়ন তৈরি করে N-টাইপ সাইডের ফ্রী ইলেকট্রনের সাথে রি-কম্বিনেশনের ফলে।
- একইভাবে সাপ্লাই ভোল্টেজের পজিটিভ পটেনশিয়ালের কারণে N-টাইপ সাইডের ফ্রী ইলেকট্রন জাংশন থেকে শিফট হয়ে দূরে যায় এবং আনকভারড পজিটিভ আয়ন তৈরি করে P-টাইপ সাইডের ফ্রী হোলের সাথে রি-কম্বিনেশনের ফলে। ফলে ডিপ্লেশন রিজিওন আরও প্রশস্ত হয়।
- এটি হচ্ছে ডায়োডের রিভার্স বায়াসড কন্ডিশন। তখন ডায়োড ওপেন সার্কিট হিসেবে কাজ করে। এই কন্ডিশনে চার্জ কেরিয়ার জাংশন ক্রস করতে পারেনা। এভাবে ডায়োড কারেন্ট প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে যখন রিভার্স বায়াসড কন্ডিশনে থাকে।
- রিভার্স বায়াসড কন্ডিশনে ডায়োড ওপেন সার্কিট হিসেবে কাজ করে। আমরা যদি রিভার্স ব্রেকডাউন ভোল্টেজের চেয়ে বেশি ভোল্টেজ সাপ্লাই দেই তাহলে ডায়োড রিভার্স কন্ডিশনেও কন্ডাক্ট হয় এবং কারেন্ট প্রবাহে অনুমতি দিয়ে দেয়।
লাইট এমিটিং ডায়োডঃ
লাইট এমিটিং ডায়োড বা এলইডি হচ্ছে স্পেশাল পার্পাস ডায়োড। ডায়োডের সাথে এর মূল পার্থক্য হচ্ছে এটি লাইট বিচ্ছুরণ করে। পটেনশিয়াল বেরিয়ার ভোল্টেজ হচ্ছে ০.৭ ভোল্টের বেশি ভোল্টেজ দিলে ডিপ্লেশন বেরিয়ার ক্রস করে ফ্রী চার্জ কেরিয়ার এক সাইড থেকে অন্য সাইডে যায় যা ডায়োড ফরওয়ার্ড কারেন্ট প্রোভাইড করে এবং তখন আলো বিচ্ছুরিত হয়।