ট্রায়াক:
- ট্রায়াক হচ্ছে বাই-ডিরেকশনাল ডিভাইস যা এসি সুইচিং করতে পারে। ট্রায়াক দুটি থাইরিস্টরের কম্বিনেশনে গঠিত হয়।
- থাইরিস্টরের সাথে এর পার্থক্য হচ্ছে ট্রায়াক বাই-ডিরেকশনাল অর্থাৎ এর গেইটে এসি অথবা ডিসি সিগন্যাল দিলে এটি কন্ডাক্ট হয়। কিন্তু থাইরিস্টর ইউনিডিরেকশনাল ডিভাইস; এর গেইটে পজিটিভ(+) ভোল্টেজ দিলে কন্ডাক্ট হয়।
- ট্রায়াক হচ্ছে ৩-টার্মিনাল, ৪-লেয়ার, বাই-ডিরেকশনাল সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস যা সাধারণত এসি পাওয়ার কন্ট্রোলে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
- সর্বোচ্চ ১৬কিলোওয়াট এসি পাওয়ার ট্রায়াক কন্ট্রোল করতে পারে।
- A1 যদি A2 এর সাপেক্ষে ফরওয়ার্ড বায়াস হয় তবে কারেন্ট A1 থেকে A2 তে প্রবাহিত হয়।
- আবার A2 যদি A1 এর সাপেক্ষে ফরওয়ার্ড বায়াস হয় তাহলে কারেন্ট A2 থেকে A1 এ প্রবাহিত হয়।
এই দুই কন্ডিশন তখনই ফুলফিল হয় যখন সঠিক গেইট পালস দেওয়ার মাধ্যমে গেইট ট্রিগার করা হয়।
কন্সট্রাকশনঃ
- দুটি SCR বা থাইরিস্টর গেইট টার্মিনালের সাথে ইনভার্সলি প্যারালাল অবস্থায় থাকে। গেইট টার্মিনাল এখানে কমন।
- গেইট টার্মিনাল n এবং p রিজিওনে কানেক্টেড থাকে। এই কারণে যেকোনো পোলারিটির সিগন্যাল দেওয়া যায়। এখানে অ্যানোড(A) এবং ক্যাথোড(K) নাই; তাই উভয় পোলারিটির জন্য এটি কাজ করে।
- এর তিনটি টার্মিনাল হচ্ছে মেইন টার্মিনাল-০১(MT1), মেইন টার্মিনাল-০২(MT2) এবং গেইট টার্মিনাল G ।
MT1 কানেক্টেড P2, N2
MT2 কানেক্টেড P1, N4
G কানেক্টেড P2, N3
অপারেশনঃ
- ট্রায়াকের(TRIAC) গেইটে ব্রেকওভার ভোল্টেজের বেশি ভোল্টেজ দিলে এটি অন হয়।
- এই ভোল্টেজ না বাড়িয়ে ট্রায়াকের গেইটে ৩৫ মাইক্রোসেকেন্ড পালস দিলেই এটি কন্ডাক্ট হয়। যখন ব্রেকওভার ভোল্টেজের কম ভোল্টেজ থাকে তখন গেইট ট্রিগার করে একে অন করা যায়।
- ট্রায়াকের চারটি মোড অব অপারেশন আছে;
মোড-০১ঃ যখন MT2 এবং গেইট G এ পজিটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
মোড-০২ঃ যখন MT2 এ পজিটিভ এবং গেইট G এ নেগেটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
মোড-০৩ঃ যখন MT2 এবং গেইট G এ নেগেটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
মোড-০৪ঃ যখন MT2 এ নেগেটিভ এবং গেইট G এ পজিটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
মোড-০১ঃ
যখন MT2 এবং গেইট G এ পজিটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
- P1-N1-P2-N2 পথে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- এখানে P1-N1 এবং P2-N2 ফরওয়ার্ড বায়াসড; কিন্তু N1-P2 ব্লকড। এই অবস্থায় ট্রায়াককে পজিটিভ বায়াসড বলে।
- গেইট G তে পজিটিভ ভোল্টেজ দেওয়ার ফলে IG গেইট কারেন্ট P2-N2 দিয়ে প্রবাহিত হয়। তখন P2 লেয়ারে ইলেকট্রন ইঞ্জেক্ট হয়।
P2 লেয়ারে ইলেকট্রন ইঞ্জেক্ট করার ফলে কি ঘটে?
- P2 লেয়ারে হোল হচ্ছে মেজরিটি কেরিয়ার। ইলেকট্রন ইঞ্জেক্ট করার ফলে এখন ইলেকট্রন এবং হোল উভয়ই মেজরিটি কেরিয়ার হয়। এই কারণে P2 রিজিওনে এর আইডেন্টিটি হারায়।
- N1 রিজিওনে ইলেকট্রন হচ্ছে এর মেজরিটি চার্জ কেরিয়ার। P2 তেও এখন ইলেকট্রন চার্জ কেরিয়ার হওয়ার ফলে জাংশন J2 অদৃশ্য হয়।
- সুতরাং এখন P1-N1-P2-N2 পথে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
মোড-০২ঃ
যখন MT2 এ পজিটিভ এবং গেইট G এ নেগেটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
- P1-N1-P2-N2 পথে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- গেইট পটেনশিয়াল দেওয়ার ফলে ইলেকট্রন P2 লেয়ারে ইঞ্জেক্ট হতে থাকে এবং P2-N3 দিয়ে গেইট কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- P2 লেয়ারে ইলেকট্রন ইঞ্জেক্ট হওয়ার ফলে এতে হোলের পাশাপাশি ইলেকট্রনও মেজরিটি চার্জ কেরিয়ার হয় এবং এর আইডেন্টিটি হারায়। ফলে J2 জাংশন অদৃশ্য হয়ে যায়। ফলে শুরুতে P1-N1-P2-N3 পথে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- গেইট কারেন্ট IG2 বাড়ানো হলে বামদিকে গেইট টার্মিনালের উপরে P2 পটেনশিয়াল বাড়ে MT1 এর সাপেক্ষে বা ডান সাইডের চেয়ে। যেহেতু N3 তে নেগেটিভ টার্মিনাল কানেক্টেড তাই N3 এর উপরে পটেনশিয়াল বাড়তে থাকে।
- এই পটেনশিয়াল ডিফারেন্সের কারণে বামদিক থেকে ডানদিকে কারেন্ট প্রবাহিত হয়। ফলে N1-P2-N2 ট্রানজিস্টর স্ট্রাকচারের বেইজে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- P1-N1-P2 ট্রানজিস্টরও অন হয় কারণ কালেক্টর কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার কারণে। ফলে P1-N1-P2-N2 স্ট্রাকচার দিয়ে ট্রায়াকে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
মোড-০৩ঃ
যখন MT2 এবং গেইট G এ নেগেটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
- P2 রিজিওনে ইলেকট্রন ইঞ্জেক্ট হওয়ার ফলে হোল এবং ইলেকট্রন উভয়ই মেজরিটি চার্জ কেরিয়ার হয় এবং আইডেন্টিটি হারায়। ফলে J2 জাংশন অদৃশ্য হয়।
- সুতরাং P1-N1-P2-N3 দিয়ে শুরুতে কারেন্ট প্রবাহিত হয়।
- P2 লেয়ারে P2-N3 দিয়ে ইঞ্জেক্ট হওয়া কিছু ইলেকট্রন রি-কম্বাইনড হয়। সকল ইলেকট্রন রি-কম্বাইনড হয়না যা P2 লেয়ারে এবং N1 লেয়ারে প্রবেশ করে। ফলে N1 লেয়ারের পটেনশিয়াল কমতে থাকে।
- ইলেকট্রন তখন P2-N1-P1 এর বেইজে গিয়ে একে অন করে। P1 হচ্ছে কালেক্টর P2-N1-P1 ট্রানজিস্টরের জন্য। ফলে P1 এর পটেনশিয়াল বাড়তে থাকে এবং আরও একটি ট্রানজিস্টর N4-P1-N1 অন হয় কারণ P1 হচ্ছে N4-P1-N1 ট্রানজিস্টরের বেইজ।
- ফলে কারেন্ট এখন P2-N1-P1-N4 পথে প্রবাহিত হয়। কারেন্ট MT1 টার্মিনাল থেকে MT2 দিয়ে যায়।
মোড-০৪ঃ
যখন MT2 এ নেগেটিভ এবং গেইট G এ পজিটিভ ভোল্টেজ দেওয়া হয় MT1 এর সাপেক্ষে
- গেইট G তে MT1 এর সাপেক্ষে পজিটিভ ভোল্টেজ দিলে P2-N2 দিয়ে গেইট কারেন্ট প্রবাহিত হয় এবং P2 লেয়ারে ইলেকট্রন ইঞ্জেক্ট হতে থাকে।
- P2 লেয়ারে ইলেকট্রন এবং হোল উভয়ই মেজরিটি চার্জ কেরিয়ার হওয়ার কারণে এর আইডেন্টিটি হারায় এবং J2 জাংশন অদৃশ্য হয়।
- ফলে P1-N1-P2-N2 পথে কারেন্ট প্রবাহিত হয় প্রথমে।
- P2 লেয়ারে ইঞ্জেক্ট হওয়া ইলেকট্রনের মধ্যে কিছু রি-কম্বাইনড করে হোলের সাথে। বাকিগুলো N1 লেয়ারে প্রবেশ করে। ফলে N1 লেয়ারে পটেনশিয়াল কমতে থাকে এবং P2-N1-P1 ট্রানজিস্টর স্ট্রাকচার অন হয়।
- N1 লেয়ার থেকে ইলেকট্রন P1 লেয়ারে কালেক্ট হয় যেহেতু P2-N1-P1 ট্রানজিস্টরের কালেক্টর হচ্ছে P1 এবং তা N1-P1-N4 ট্রানজিস্টরের বেইজ। ফলে N4-P1-N1 ট্রানজিস্টর স্ট্রাকচার অন হয়।
- ফলে কারেন্ট MT1 টার্মিনাল থেকে MT2 টার্মিনালে ফাইনালি প্রবাহিত হয় P2-N1-P1-N4 স্ট্রাকচার।
সুবিধাঃ
- এসি সাপ্লাইয়ের উভয় ডিরেকশনে/সাইকেলে লোডে পাওয়ার ডেলিভারি দেওয়া যায়।
- এটি উভয় পজিটিভ এবং নেগেটিভ গেইট সিগন্যালের মাধ্যমে অন করা যায়।
- এখানে একটি হিটসিঙ্ক দরকার; কিন্তু থাইরিস্টরের ক্ষেত্রে দুটি হিটসিঙ্ক লাগতো।