থাইরিস্টর/SCR:
থাইরিস্টর হচ্ছে ইউনিডিরেকশনাল সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস যা সিলিকন দিয়ে তৈরি। এই ডিভাইস সলিড স্টেট ইকুইভেলেন্ট থাইরেট্রনের(Thyratron) তৈরি। এজন্য একে থাইরিস্টর বা থাইরয়েড ট্রানজিস্টরও বলে। এটি সিলিকন কন্ট্রোলড রেক্টিফায়ার বা SCR নামেও পরিচিত।
যখন গেইট টু ক্যাথোড কারেন্ট প্রবাহিত হয় তখন অ্যানোড টু ক্যাথোড কন্ডাকশন ঘটে। ডিসির ক্ষেত্রে থাইরিস্টর খুব তাড়াতাড়ি সুইচিং করতে পারে।
কন্সট্রাকশনঃ
থাইরিস্টর ৩-টার্মিনাল বিশিষ্ট ডিভাইস যেখানে ৪টি সেমিকন্ডাক্টর লেয়ার থাকে p-n-p-n । এখানে তিনটি PN জাংশন থাকে J1, J2, J3 । এটি কারেন্ট কন্ট্রোলড ডিভাইস।
থাইরিস্টরকে দুটি ইন্টারকানেক্টেড ট্রানজিস্টরের সাথে তুলনা করা যায়। এখানে একটি PNP(Q1) এবং অন্যটি NPN(Q2) ।
- Q1 এর ইমিটার অ্যানোড হিসেবে কাজ করে এবং Q2 এর ইমিটার ক্যাথোড।
- Q1 এর বেইজ Q2 এর কালেক্টরে যুক্ত এবং Q2 এর বেইজ Q1 কালেক্টরে যুক্ত।
- থাইরিস্টরের গেইট টার্মিনাল Q2 এর বেইজে যুক্ত।
ওয়ার্কিংঃ
রিভার্স ব্লকিং মোডঃ
ব্যাটারির নেগেটিভ(-) টার্মিনাল অ্যানোডে(A) এবং পজিটিভ(+) টার্মিনাল ক্যাথোডে(K) যুক্ত করলে থাইরিস্টর রিভার্স বায়াসড প্রাপ্ত হয়।
ফলে J1, J3 জাংশন রিভার্স বায়াসিং হয় যা ডিভাইসের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হতে দেয়না। কিন্তু জাংশন J2 ফরওয়ার্ড বায়াসে থাকে।
ফরওয়ার্ড ব্লকিং মোডঃ
ব্যাটারির পজিটিভ(+) টার্মিনাল অ্যানোডে(A) এবং নেগেটিভ(-) টার্মিনাল ক্যাথোডে(K) যুক্ত করা হয়।
এই কন্ডিশনে J1 এবং J3 ফরওয়ার্ড বায়াসড এবং J2 রিভার্স বায়াসড প্রাপ্ত হয়। এই অবস্থায়ও থাইরিস্টরের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয়না।
ফরওয়ার্ড কন্ডাকশন মোডঃ
থাইরিস্টরকে দুইভাবে কন্ডাকশন করানো যায়।
১) অ্যানোড(A) টার্মিনালে পজিটিভ(+) ভোল্টেজ ব্রেকঅভার ভোল্টেজের(VB) চেয়ে বাড়ালে, অথবা
২) গেইট টার্মিনালে পজিটিভ(+) ভোল্টেজ দিলে।
প্রথম ক্ষেত্রে, বায়াসিং ভোল্টেজ বাড়ালে রিভার্সড বায়াস জাংশন J2 ব্রেকডাউন হয় VB ব্রেকঅভার ভোল্টেজে পৌঁছালে। যদিও তখন গেইট টার্মিনাল আনবায়াসড অবস্থায় থাকে।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, ফরওয়ার্ড ব্লকিং মোডে জাংশন J2 যেহেতু রিভার্স বায়াসড থাকে; তখন গেইটে কারেন্ট দিলে ইলেকট্রন ইনজেক্ট হতে থাকে এবং শেষে এই p-রিজিওন n-রিজিওন হয়ে যায়। ফলে শেষের তিনটি লেয়ার n-রিজিওন হয়। এর ফলে P-N জাংশন ফর্ম হয় এবং ফরওয়ার্ড ভোল্টেজের কারণে তখন থাইরিস্টর কন্ডাক্ট হয়।
গেইট কারেন্ট সরালেও তখন থাইরিস্টর কন্ডাকশন মোডে থাকে কারণ ইলেকট্রন অলরেডি ইনজেক্ট হয়ে p-রিজিওন n-রিজিওন হয়েছে। এই কারণে থাইরিস্টরের গেইটে ভোল্টেজ শুধু ট্রিগারিংয়ের জন্যই দেওয়া হয়।
এটি দুটি ট্রানজিস্টর ইকুইভেলেন্ট সার্কিটের মাধ্যমে ভালভাবে বিবৃত করা যায়।
- গেইট টার্মিনালে পজিটিভ(+) ভোল্টেজ দিলে Q2 ট্রানজিস্টর অন হয়। ফলে এর কালেক্টর কারেন্ট Q1 এর বেইজে প্রবাহিত হয়ে Q1 কে অন করে।
- Q1 অন হওয়ার ফলে এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট Q2 এর বেইজে চলে যায়। এই অবস্থায় থাইরিস্টর সেচুরেশনে চলে যায়। গেইট টার্মিনালের বায়াসিং কারেন্ট সরালেও থাইরিস্টর তখন অন হয়ে থাকে। কারণ থাইরিস্টরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট এর মিনিমাম ল্যাচিং কারেন্টের চেয়ে বেশি।
- ল্যাচিং কারেন্ট হচ্ছে গেইট ভোল্টেজ সরালেও থাইরিস্টরকে অন রাখতে যে মিনিমাম কারেন্ট দরকার হয় সেটি। এই অবস্থায় থাইরিস্টরকে আমরা ল্যাচড বলতে পারি।
- থাইরিস্টরকে তখন অফ করতে হলে বাইরে থেকে এক্সটার্নাল ইম্পিডেন্স সার্কিট যুক্ত করতে হয়। এটি থাইরিস্টরের বড় সুবিধা। ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে দেখেছিলাম একে অন রাখতে সবসময় বায়াসিং কারেন্ট দিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু থাইরিস্টরের ক্ষেত্রে একবার গেইট কারেন্ট দিয়ে সরিয়ে ফেললেও এটি কন্ডাকশন মোডে থাকে।
সুতরাং এটি বড় সার্কিট অ্যাপ্লিকেশনে অনেক ইলেক্ট্রিসিটি সাশ্রয় করে। বিশেষ করে হাই ভোল্টেজ ডিসি ট্রান্সমিশনে থাইরিস্টর ব্যবহৃত হয়।
সুবিধাঃ
- থাইরিস্টর ডিসি কারেন্ট খুব দ্রুত সুইচিং করতে পারে।
- কারেন্ট অপারেটেড ডিভাইস; এটি অল্প গেইট কারেন্ট ব্যবহার করে অধিক কারেন্টের অ্যানোড কারেন্ট কন্ট্রোল করতে পারে।
- বড় ভোল্টেজ, কারেন্ট, পাওয়ার হেন্ডেল করতে পারে।
- এর ট্রিগারিং সার্কিট অনেক সিম্পল, তাই অন করা অনেক সহজ।
- এসি পাওয়ার কন্ট্রোল করতে পারে।
- সস্থা ডিভাইস।